করোনার মহামারীতে নারায়ণগঞ্জবাসীর পাশে ওসমান পরিবার প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের হটস্পট যখন নারায়ণগঞ্জ, ঠিক তখনই সাধারন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেই আস্থা আবারও অর্জন করেছে প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সদস্যরা। নানা চড়াই-উৎড়াই পার করা নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবার বরাবরই সাধারন মানুষের আস্থা আর বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। লকডাউনে থাকা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে করোনাযুদ্ধে নিয়োজিত জেলা ও স্বাস্থ্য প্রশাসনের পাশে দাঁড়িয়ে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন তারা। জানা গেছে, গত মার্চে গণপরিবহন বন্ধ ও সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে কর্মহীন হয়ে পড়েন শ্রমিক অধ্যুষিত এই এলাকার কমপক্ষে ১২ লাখ শ্রমিকসহ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। এসময় সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যনিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করা শুরু করেন জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন।
এদিকে ওসমান পরিবারের সন্তান বিকেএমইএ সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত নিজের সংসদীয় আসনে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ২০ হাজার দরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২ কোাটি টাকা নগদ প্রদান করেন। এর মধ্যে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট ৬৩ লাখ টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ৯৯ লাখ টাকা, উপজেলা পরিষদ এলাকায় ৯ লাখ টাকা, ৬০০ স্বেচ্ছাসেবীর সম্মানী ভাতা ২৭ লাখ টাকা, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে মৃতদের দাহ এবং দাফনের ব্যবস্থার সহযোগিতা জন্য ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের জন্য থাকার ব্যবস্থা, খাবারের ববস্থা বাবদ নগদ ২০ লাখ টাকা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলর বৃন্দদের মাধ্যমে এলাকার নিম্ন মধ্যবিত্ত প্রায় ১৩ হাজার মানুষের মাঝে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১০ কেজি করে ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি চাল বিতরণ করেছেন।
অপরদিকে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে নিজের নির্বাচনী এলাকায় ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা অনুদান ঘোষণা করেন শামীম ওসমান। এর মধ্যে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় প্রতিটি ওয়ার্ডে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে কর্মহীন ও মধ্যবিত্ত ২০ হাজার পরিবারের মাঝে রাতের আঁধারে ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন তার নেতাকর্মীরা। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন, নানা শ্রেণি পেশার ও দরিদ্র পরিবারের মাঝে নগদ ৪০ লাখ টাকার অর্থ সহায়তাও দেন শামীম ওসমান। পাশাপাশি গণমাধ্যম, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য সহায়তায় নিযুক্তদের মাঝে ৫০০ পিস পিপিই সরবরাহ করা হয় শামীম ওসমানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে। নারায়ণগঞ্জ নগরীর কর্মহীন হয়ে পরা প্রায় এক হাজার হকার পরিবার, পরিবহন সেক্টরের প্রায় ২ হাজার শ্রমিক পরিবার ও আলেম সমাজের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী দেন শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জে করোনার পরীক্ষণ ল্যাব ও নমুনা সংগ্রহের দাবি জানিয়ে আসছিলেন শামীম ওসমান। তার আহবানে ৪টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নমুনা সংগ্রহের জনবল দেয়া হয় এবং তাদের সহায়তায় ব্যক্তিগত অর্থায়নে নমুনা সংগ্রহকারীদের জন্য ২টি সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স দেন শামীম ওসমান। তার প্রচেষ্টায় ও দাবির প্রেক্ষিতে দেশে প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ার নামে প্রতিষ্ঠানকে করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের নমুনা সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেয় সরকার। এর পাশাপাশি শামীম ওসমানের আহবানে তার সমর্থক দলীয় নেতারা ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় মোট সাড়ে ৩৮ হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়।
সাধারণ ছুটি বৃদ্ধি করার পর কর্মহীনদের খাদ্যের অভাব অতিমাত্রায় শুরু হলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কর্মহীন ও বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারের পাশে এগিয়ে আসেন জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও এমপি শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি। গত এক মাসে ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও শহর এলাকায় রাতের আঁধারে সালমা ওসমান লিপির ব্যক্তিগত অর্থায়নে মোট ৬ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হয়।
এগিয়ে আসেন ওসমান পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংসদ শামীম ওসমান পুত্র ইমতিনান ওসমান অয়ন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ১০ হাজার স্যানিটাইজার, ১০ হাজার মাস্ক প্রদান করেন তিনি। তার ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে ছাত্রলীগের বিশাল নেতাকর্মীর বাহিনী। সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডসহ ফতুল্লা এলাকায় অয়ন ওসমানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয় সড়কে এবং ৫ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়এদিকে ওসমান পরিবারের এই জনসম্পৃক্তা বেশ সাড়া ফেলেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। দলমত নির্বিশেষে ওসমান পরিবারের এই পাশে দাড়ানোর কথা স্বীকার করছেন সকলেই।
এ ব্যাপারে এমপি শামীম ওসমান বলেন, যারা আমাদের উপহার গ্রহণ করেছেন তারা আমাদের উপর দয়া দেখিয়েছেন, ভালোবাসা দেখিয়েছেন বলেই মনে করি আমি।
কারণ রিযিকের মালিক আল্লাহ। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে মানুষের পাশে থাকা শিখেছি। মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা পরিবারের কাছ থেকেই পেয়েছি। সাধারণ মানুষের ভালোবাসা ছাড়া চাওয়া পাওয়ারও কিছু নেই আমাদের। সেটুকুই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আমাদের জন্য।