১২ জুলাই ২০২০, তালহা জামানঃ
করোনা টেস্ট না করেই রিপোর্ট দেয়ার কেলেংকারীর জন্য জেকেজি (জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার) গ্রুপ এখন দেশব্যাপী আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কীভাবে এ গ্রুপ স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা টেস্টের অনুমতি পেয়েছিল তা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (সমন্বয়) ডা. জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেকেজি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়ক আরিফুল চৌধুরী ওভাল গ্রুপ লিমিটেড নামে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপেরও স্বত্ত্বাধিকারি। ওভাল গ্রুপ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ ২০১৮-এর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করে। চিকিৎসা পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনেরও একাধিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করে। কোভিড সংকট শুরু হওয়ার পর উক্ত আরিফুল চৌধুরী স্বাস্থ্য অধিদফতরে আসেন এবং জানান যে, তিনি জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার (জেকেজি) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক।
‘জেকেজি গ্রুপ দক্ষিণ কোরিয়ার মডেলে বাংলাদেশে কিছু বুথ স্থাপন করতে চায়। এসব বুথের মাধ্যমে পিসিআর পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পিসিআর ল্যাবরেটরিগুলোকে সরবরাহ করা হবে। এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর বা সরকারকে কোন অর্থ দিতে হবে না। ধারণাটি ভালো এবং কোভিড পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন এই বিবেচনা থেকে ওভাল গ্রুপের সঙ্গে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় জেকেজি গ্রুপকে অনুমতি দেয়া যায় বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের মনে হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘একটি ভালো কাজের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার মানসে ঐতিহ্যবাহী তিতুমীর কলেজ কর্তৃপক্ষও জেকেজি গ্রুপের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ায়। পরবর্তিতে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেলে স্বাস্থ্য অধিদফতর জেকেজি গ্রুপকে প্রদত্ত বুথ পরিচালনার অনুমতি বাতিল করে। স্বাস্থ্য অধিদফতর একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। তাই দ্রুত কোভিড স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণের মূল লক্ষ্য ও সদিচ্ছা নিয়ে জেকেজিকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি প্রতারণা করতে পারে এমন ধারণা আদৌ ছিল না।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ইদানিং কোনো কোনো স্বার্থান্বেসী মহল কল্পিত ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে গণমাধ্যমকে বিভ্রান্ত করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুনাম নষ্ট করার প্রয়াস চালাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠান ও পদ্ধতিগত সাধারণ সীমাবদ্ধতাগুলোকে আমলে নেয়া হচ্ছে না। সহানুভূতির বদলে তীর্যক মন্তব্য ও খণ্ডিত এবং বিকৃতভাবে তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। অশালীনভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ব্যক্তিগত চরিত্র হননের প্রচেষ্টাও দেখা যাচ্ছে। এসবের পেছনে হীন ব্যক্তিস্বার্থও কাজ করছে বলে আমরা মনে করি। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, নিষ্ঠাবান কর্মকর্তারা এখন মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার বিষয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। ফলে আরও বেশি করে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ছে। কেউ অপরাধ করলে তদন্তেই তা ধরা পড়বে এবং শাস্তিও হবে। তাই বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নির্দোষ ব্যক্তির চরিত্র হনন এবং তাদের অপরাধী হিসেবে চিত্রিত করা কাম্য নয়।’