৪ জুলাই ২০২০,তালহা জামানঃ
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় কে কত টাকা পাবেন তা আগামী তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
এদিকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, পাটকল বন্ধ ঘোষণা করা মানে এগুলোকে শেষ করে দেয়া নয়। সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় নতুন করে আবারও যাত্রা শুরু করবে পাটকল।
শুক্রবার রাজধানীর পাটমন্ত্রীর বাসভবনে পাটকল নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সরকারের দুই মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কে এম আব্দুস সালাম এবং পাটকল শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নিজে পাটকল শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন জানিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘আমি শ্রমিক ভাইদের বলব, যেখানে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন সেখানে ভাববার কোনো বিষয় নেই। আপনারা খুবই নিরাপদে আছেন, খুব শান্তিতে থাকবেন-এই আমার ধারণা। শ্রমিকরা অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন। এটাই স্বাভাবিক। অনেকে বলেছেন কী পাব না পাব জানব কীভাবে? চলতি মাসের বেতন এ সপ্তাহের শেষের দিকে আপনাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। আরও দুই মাস নোটিশ পিরিয়ড আছে। পরের মাসের প্রথম সপ্তাহে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে। এরপর বাজেট ক্লিয়ারেন্স হবে। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনদিনের মধ্যে তালিকা তৈরি করতে। এরমধ্যে আপনারা (পাটকল শ্রমিকরা) জেনে যাবেন কে কত পাচ্ছেন না পাচ্ছেন। সেটা আপনারা অবগত হবেন।’
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি টাকা, এখানে মাঝখানে কেউ নেই, মাঝখানে কোনো দালাল নেই। সমস্ত সুবিধা-গ্রাচ্যুইটি, অবসর সুবিধা, গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সেটাও তারা পাবেন। আমরা ২০১৫ সালের মজুরি অনুযায়ী করেছি। ২০১৫ সালের মজুরি না হলে অর্ধেক টাকায় আমরা পারতাম। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোন করে বলেছেন, আমাদের শ্রমিক লোকদের ঠকাতে পারবা?’ পাট শ্রমিকদের আমরা কোনোভাবে ঠকাবো না-এই নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়েছেন।
শ্রমিকদের অর্ধেক টাকা নগদে আর অর্ধেক টাকায় সঞ্চয়পত্র কিনে দেয়া হবে জানিয়ে পাটমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেখ, আমাদের দেশে বাপেরা টাকা পেলে ছেলেরা গিয়ে বাপকে চাপ দেয় টাকা দাও। বাপের কাছ থেকে জোর করে টাকা নিয়ে চলে যায়। তখন ভাত না খেয়ে মরে। জামাই বলে টাকা দাও নইলে তোমার মেয়েকে নিয়ে যাও। এ ধরনের অনেক ইতিহাস আছে। এজন্য তিনি বলেছেন, অর্ধেক টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে দেব যাতে কেউ টাকা না নিয়ে যেতে পারে। এটার লাভ দিয়ে ভাঙিয়ে ভাঙিয়ে খাবে।’
শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘আমরা পিপিপি করছি মানে মালিকানা চলে যাবে না। এখানে অংশীদারিত্ব থাকবে, বাইরের কোনো মালিকানা থাকবে না। আমরা ৬০ বছরের পুরনো মেশিনের স্থলে নতুন মেশিন বসাতে চাই যার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়বে। সেখানে আমাদের পুরনো শ্রমিকরা অগ্রাধিকার পাবেন, যারা কাজ করতে চান।’