২০১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচেই অবসর নিতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কেউ তার বিদায়ী ম্যাচ আয়োজনের ব্যবস্থার কথা বলেছিলেন। মাশরাফীও তাই সেই সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে আসেন।
কিন্তু ২ কোটি টাকা খরচায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আয়োজিত ম্যাচে বিদায় নিতে চাননি বলে মন্তব্য করেছেন মাশরাফী।
বিশ্বকাপের আগে থেকেই মাশরাফীর বিদায় নিয়ে ছিল আলোচনা। তবে মাশরাফী কখনো এনিয়ে মুখ খুলছিলেন না। বিশ্বকাপ শেষ করে দেশে ফেরার পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ আয়োজন করে মাশরাফীকে বিদায় দেওয়ার আলোচনা চলেছে।
তাই মাঠ থেকে অবসর নেওয়ার ভাবনা থেকে সরে আসেন। এক পর্যায়ে নিজের অবসর ভাবনা পুরোপুরি বদলে যায় বলেও জানিয়েছেন মাশরাফী।
বুধবার একটি ইউটিউব চ্যানেলে মাশরাফী বলেন, ‘আমার অবসরের ঘটনা এর আগেও একটা ঘটেছে, সেটা টি-টোয়েন্টিতে। আমি সামনে এসে আদৌ কাউকে কারো কথা বলিনি যে কি কারণ। তখন কিন্তু সবাই আমার পক্ষেই ছিল। তারপরও আমি কিছু বলিনি। সবাই যখন আমার পক্ষে নাই, তখনও এত কিছু বলার নাই। শুধু একটা কথাই বলব বিশ্বকাপেরবিশ্বকাপ ম্যাচে আমি অবসর নিতে চেয়েছিলাম।’
জোর দাবি জানিয়ে মাশরাফী বলেন, ‘এটা যদি কেউ অস্বীকার করতে পারে, এমনকি যদি ক্রিকেট বোর্ড থেকেও অস্বীকার করে, তাহলে তাকে আমার সামনা সামনি কথা বলতে হবে। শেষ ম্যাচে (পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ) যখন আমার কাছে মনে হয়েছিল, তখন আমি করতে (রিটায়ার্ড) চেয়েছিলাম।’
মাশরাফী বলে যান, ‘এরপর যেটা হয়েছিল, যে এভাবে না হোক, সুন্দরভাবে হলেই বেটার। এরকম একটা কথা আসছে। দেশের ফেরার পর যখন জিম্বাবুয়েকে কতটাকা খরচ করে, একটা ম্যাচ আয়োজন…দুই কোটি…। তখন আমার কাছে মনে হয়েছিল, মাশরাফী হয়তো বা ডিজার্ব করে মাঠ থেকে বিদায় নেওয়াটা। কিন্তু একটা ম্যাচের জন্য দুই কোটি টাকা এটা কখনো ডিজার্ব করে না। যেখানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে করুণ চিত্র, সেখানে আমার একার জন্য দুই কোটি টাকা দিয়ে আজোয়ন করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। স্রেফ এই জায়গা থেকে আমি অবসর নেইনি।’
এরপর তো অনেক নাটক, অনেক আলোচনা। শেষ পর্যন্ত এ বছর মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে অবসরে যান মাশরাফী। তবে ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
মাশরাফী বলেন মাঝে তার অবসরের ভাবনাতেই পরিবর্তন আসে, ‘এমন হয় না, একটু সময় পেলে নিজের চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন হয়…। সেটা হয়তো বা হতে পারে। সেটা হয়নি সে কথা বলছি না।’
‘আমার জন্য জিনিসটা অনেক ভারী হয়ে যাচ্ছিল যে এতই ব্যস্ততা, দুই কোটি টাকা দিয়ে আমাকে রিটায়ার্ড করাতে হবে। এই জিনিসগুলোও এসেছে। আর আমাকে যে মাঠ থেকে অসবর নিতেই হবে, এমন তো না। এটাও আমার কাছে মনে হয়েছিল সত্যি কথা।’
মাশরাফীর অবসর সংক্রান্ত আলোচনায় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে তার দূরত্ব বা সমন্বয়হীনতা হচ্ছে, এমন কিছুও ভাবা হচ্ছিল। মিডিয়ায় জোর আলোচনাও চলছিল। তবে মাশরাফী পরিষ্কার করেছেন, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এ ক্ষেত্রে ছিলেন একেবারেই স্বচ্ছ ভূমিকায়।
মাশরাফী বলেন, ‘পাপন ভাই কিন্তু আমার সঙ্গে সব সময় কথা বলে রেখেছেন। পাপন ভাই আমাকে ডেকেছিলেন, বলেছেন তোমার ভাবনা আমাকে জানিও। কয়েকবার তিনি আমাকে বলেছেন। সেই জায়গা থেকে এটা পরিষ্কার আমাকে ক্রিকেট বোর্ড যথেষ্ট সম্মান দিয়েছে। অবসর বিষয়ে কথা বলতে পাপন ভাই অন্য কাউকে দায়িত্ব দেননি। সব সময় আমার সঙ্গে তিনি নিজেই কথা বলেছেন।’