১৫ জুলাই ২০২০, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির পর চার বছর আগে সই করা রেলপ্রকল্পের চুক্তি থেকে ভারতকে বাদ দিল ইরান। এর মধ্যে গত সপ্তাহে একাই প্রকল্পটির উদ্বোধন করে দেশটি।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে চাবাহার সমুদ্রবন্দর থেকে আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী ইরানি শহর জাহেদান পর্যন্ত ৬২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন বসানো হবে।
২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইরান সফরের পরেই এই ঐতিহাসিক চুক্তি হয়। প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত আছে আফগানিস্তানও।
মূলত আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে একটি বিকল্প বাণিজ্য পথ গড়ে তুলতে প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত হয় ভারত।
তবে ইরানের অভিযোগ, সমঝোতা হওয়ার ৪ বছর পার হয়ে গেলেও ভারত প্রকল্পটিতে ফান্ড সরবরাহ করেনি। ভারতের ওপর আস্থা রাখা হলেও তারা সাহায্য করেনি ৷
গত সপ্তাহে প্রজেক্টটির একাংশে লাইন পাতার কাজ উদ্বোধন করেন ইরানের পরিবহণ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মোহাম্মদ এসলামি।
তিনি জানান, ওই রেলপথটি আরও বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে আফগানিস্তান সীমান্তের আরও একটি শহর জারাঞ্জে।
ইরানের এক কর্মকর্তা পরে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভারতের কোনও সহায়তা ছাড়া তেহরানের রেল কর্তৃপক্ষ একাই ওই প্রকল্পটি করবে। কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের মধ্যে।
প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ৪০ কোটি ডলার দেবে ইরানের জাতীয় উন্নয়ন তহবিল। এর আগে ভারতের সরকারি রেলওয়ে কোম্পানি ইরকান এই কাজ করার দায়িত্ব নিয়েছিল ৷
সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদের ৪০ হাজার কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে চাবাহার রেল প্রজেক্টে বেইজিংকে যুক্ত করেছে তেহরান।
এই প্রতিরক্ষা চুক্তির ১৮ পৃষ্ঠার নথিপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমসের হাতে আসে। এতে দেখা যায়, চীন ইরানের ব্যাংক, টেলি যোগাযোগখাতসহ রেল ও বন্দরের প্রজেক্টগুলোতে যুক্ত হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের চাপকেও ইরানের সঙ্গে রেল প্রকল্প থেকে ভারতের পিছিয়ে আসার কারণ হিসেবে দেখছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
তেহরানের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দিল্লির উপর দুই বছর ধরে চাপ বাড়াচ্ছিল ওয়াশিংটন। যার ফলে ইরান থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয় ভারতের মোদি সরকারকে।