১৬ জুলাই ২০২০, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
নীল নদের ওপর স্থাপিত বিতর্কিত জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পানি নেয়া শুরু করেছে ইথিওপিয়া। এ নিয়ে মিশর ও সুদানের সঙ্গে বিরোধ আরও চরম আকার ধারণ করতে যাচ্ছে দেশটির।
বিবিসি জানায়, বুধবার নীল নদ থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পানি প্রত্যাহার করা শুরু করেছে ইথিওপিয়া। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বিশাল জলাধারটিতে ভরা হচ্ছে এই পানি।
ইথিওপিয়ার পানি মন্ত্রী সেলেশি বেকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। স্যাটেলাইট চিত্রেও দেখা যাচ্ছে, জলাধারের পানির স্তর বাড়তে শুরু করেছে।
নীল নদের ওপরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছে মিশর ও সুদান। এ নিয়ে মিশর ও ইথিওপিয়া মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দেয়।
এদিকে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়া নীল নদের ওপর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও চালু করার ব্যাপারে সতর্ক করেন মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শোউকরি।
এই বাঁধের ফলে নদটির নিচের প্রবাহের দিকে থাকা দেশগুলোর সুরক্ষা ব্যাহত হবে বলে তিনি জানান।
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সতর্ক করেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দেবে এবং সংকট ও সংঘাত সৃষ্টি করে এই অঞ্চল অস্থিতিশীল করে তুলবে।
ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলে নীল নদের প্রধান শাখা ব্লু নীলে ২০১১ সালে বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করে ইথিওপিয়া, যেখান থেকে নীল নদের ৮৫ শতাংশ পানি প্রবাহিত হয়।
ইথিওপিয়া পরিকল্পিত এই বাঁধটি নির্মিত হলে সেটা হবে আফ্রিকার সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
মিসর আশঙ্কা করছে, এর ফলে ইথিওপিয়া, নদীটির পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে।
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কোনো নদীর পানি সরিয়ে ফেলে না তবে এর ফলে নদীটির স্রোত প্রবাহের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
১৯২৯ সালের একটি চুক্তি এবং পরবর্তীতে ১৯৫৯ সালের আরেকটি চুক্তিতে মিসর এবং সুদানকে নীল নদের পানির প্রায় সমস্ত অধিকার দেয়া হয়। যদিও পুরোনো এসব আইন মানতে ইচ্ছুক নয় ইথিওপিয়া, কারণ তাদের ব্লু নীলের পানি নীল নদে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে।
এদিকে মিসরের দুশ্চিন্তা হলো, নীল নদে যদি পানি প্রবাহ কমে যায়, তাহলে সেটি লেক নাসেরকে প্রভাবিত করবে। যার ফলে মিশরের আসওয়ান বাঁধে পানির প্রবাহ কমে যাবে, যেখান থেকে মিশরের বেশিরভাগ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।
এ ছাড়া এই বাঁধের কারণে নীল নদের পানির প্রবাহ যদি অনেক কমে যায়, তাহলে সেটি মিসরের নদীপথে পরিবহন ব্যবস্থাকেও হুমকির মুখে ফেলবে এবং কৃষকদের কৃষি ও পশুপালনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।