০২ জুলাই ২০২০,তালহা জামানঃ
সারা বিশ্ব যখন করোনাভাইরাসের আঘাতে কুপোকাত, জীবন বাঁচাতে একটি ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে তখনই সুসংবাদ দিল বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক।
মাত্র দেড় মাসে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি কোনো ধরনের মেশিনপত্র ছাড়া করোনা পরীক্ষার কিটও আবিষ্কারের দাবি করেছে তারা।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি করোনা ভ্যাকসিনের অ্যানিমেল ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে।
তবে প্রটোকল অনুযায়ী এখনও তারা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর এবং বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের কোনো অনুমতি নেয়নি।
এ প্রসঙ্গে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, দেশের একটি প্রতিষ্ঠান করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে এটি টিভিতে দেখেছি।
এর বেশি কিছু জানি না। এখনও কেউ আমাদের কাছে অনুমোদনের জন্য আসেনি। এমনকি এ ধরনের কিছু বাংলাদেশে হচ্ছে বলেও জানা নেই।
এ প্রসঙ্গে গ্লোব বায়োটেকের চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ বলেন, ভ্যাকসিনের অ্যানিমেল ট্রায়াল হয়েছে গত সপ্তাহে। সেখানে দেখা গেছে, এটা সফলভাবে কাজ করছে।
এ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজ শুরু হয় দেড় থেকে দুই মাস আগে। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরকে জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পরের স্টেপ, ওদের কাজ এখনও আসেনি। ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দেবে বিএমআরসি, এরপর ওষুধ প্রশাসনের কাছে যেতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন কী নিয়ে করতে যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হল, এটা মানুষকে জানাতে হবে, মানুষকে আশা দিতে হবে।
আশা নিয়েই মানুষ বাঁচে। আমরা নিজেরাই এটা নিয়ে খুব আশান্বিত, যেহেতু অ্যানিমেল টেস্টে অ্যান্টিবডি পেয়েছি সেহেতু ডিক্লেয়ার দিয়ে দিয়েছি যে কোভিডের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ফেলেছি।
তবে এর আরও বহু ধাপ রয়েছে, সেগুলো আমরা স্টেপ বাই স্টেপ করব। বিএমআরসি যখন আমাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দেবে তখন ওষুধ প্রশাসন জানবে।
আর যদি এটা সফল হয় তাহলে তো বাংলাদেশের নাম বিশ্বের মানচিত্রে উঠে গেল। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি করোনা টেস্টের জন্য কিট বানাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মেশিন ছাড়া করোনা পরীক্ষা করা যাবে। সেটাও হয়তো আগামী কয়েকদিনের ভেতরে ঘোষণা দেব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্যাকসিন আবিষ্কার কোনো মুখের কথা নয়। এর জন্য আন্তর্জাতিক প্রটোকল মেনে চলতে হয়। ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করে জিনের একটি অংশ কেটে নিয়ে (যেটা ভাইরাসটির বৈশিষ্ট্য বহন করবে কিন্তু প্রাণী দেহের ক্ষতি করবে না) সেটা দিয়ে পরীক্ষা করতে হয়।
এক্ষেত্রে অবশ্যই বায়োসেফটি ৩ লেভেলের ল্যাবে প্রয়োজন। তাছাড়া মাত্র দুটি বা তিনটি পশুর ওপরে এ ভাইরাসের প্রয়োগ করা যায়।
কারণ অন্যান্য প্রাণীতে এটি সঠিকভাবে কাজ করে না। এমনকি যে পশুর ওপর ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হবে সেই পশুটিকেও নিরোগ করে ছাড়তে হয়, নয়তো সেটি থেকেও মহামারী ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এ প্রক্রিয়া পুরোটাই স্বচ্ছ হতে হবে। তাছাড়া যেই সময়ে তারা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি করেছে, এত অল্প সময়ে সেটি সম্ভব নয়।