করোনাকালে এতদিন নিজে অনলাইন আড্ডার সঞ্চালক ছিলেন তামিম ইকবাল। এবার অতিথি হয়ে গেলেন তিনি। করোনার সময়টাতে বসে না থেকে সাবেক পাকিস্তানি ওপেনার রমিজ রাজাও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তামিম ইকবালের মতো ক্রিকেটার-সাবেক ক্রিকেটারদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তার অতিথি তালিকায় বৃহস্পতিবার ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। দীর্ঘ আড্ডায় তামিমের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট, ক্যারিয়ারের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন সাবেক পাকিস্তানি ওপেনার। আড্ডায় তামিমকে রমিজ পাকিস্তানের সাবেক তারকা সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গে তুলনা করেন।
ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে আইসিসির সতর্কতার শেষ নেই। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব ধরনের তথ্য প্রতি সিরিজ বা টুর্নামেন্টের শুরুতে ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তবু ম্যাচ ফিক্সিং থামছে না। বাংলাদেশেও পড়েছে ফিক্সিংয়ের কালো থাবা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসানও ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েছিলেন। কিন্তু আইসিসিকে না জানানোর কারণে এক বছর নিষিদ্ধ হন তিনি। আড্ডায় পাতানো প্রসঙ্গে তামিম ইকবালের অভিমত জানতে চান রমিজ রাজা।
তামিম বলেন, খেলা ও দেশের প্রতি সত্যিকারের ভালোবাসা থাকলে ম্যাচ পাতানোর মতো কাজ কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। ‘আমি মনে করি আইসিসি যথেষ্ট করছে। এরপরও কেউ যদি জুয়াড়িদের কাছ থেকে টাকা নেয়, তাহলে বিষয়টা ওই ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে।’ ম্যাচ পাতানো প্রসঙ্গে বিসিবি ও বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের ভূমিকারও প্রশংসা করেন তামিম। কিন্তু তামিম নিজেও জানেন, সব সময়ই ক্রিকেটারদের ভুল পথে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। তবে ফাঁদে পা দেওয়ার আগে ক্রিকেট খেলা শুরু করার আসল কারণটা একবার মনে করতে বললেন তামিম, ‘আমরা সবাই জানি আমাদের চারপাশে এই রকম মানুষ আছে। ওরা যেভাবেই হোক ফাঁদে ফেলতে চাইবে। তবে আপনাকে সতর্ক হতে হবে। আপনাকে বুঝতে হবে আপনি আপনার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এক নম্বর ব্যাপার হলো, আপনি খেলা শুরু করেছেন কিন্তু খেলাটা পছন্দ করেন বলে। ব্যাট ধরেছি খেলার প্রতি ভালোবাসা থেকে। কোনো অনৈতিক কাজ করার আগে এটা মাথায় রাখতেই হবে।’
আড্ডায় তামিম ইকবালের ক্যারিয়ার নিয়ে জানতে চান রমিজ রাজা। কতদিন খেলবেন সেই প্রশ্ন রাখেন। জবাবে তামিম আরও ৬ বছর খেলার কথা বলেন। ১৩ বছরের বর্ণিল ক্যারিয়ার আরও দীর্ঘ করার স্বপ্ন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের। ৩১ বছর বয়সী তামিম বলেন, ‘আমার মনে হয় মাঝামাঝি আছি। এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি আমি আরও ৬ বছর খেলতে পারব।’ আরেক ধাপ উন্নতি করে নিজেকে বিশ্বসেরাদের কাতারে নিয়ে যেতে চান তামিম। ক্যারিয়ার শেষে সেরাদের দলে থাকার স্বপ্ন দেখেন তিনি, ‘আমি যদি নিজেকে অন্যদের মতো পরের ধাপে নিতে পারি, তাহলে ক্যারিয়ার শেষে খুবই খুশি হব। এখন পর্যন্ত যা করেছি ভালোই করেছি। তবে সেরাদের সঙ্গে নিজের নাম রাখতে আমাকে পরের ধাপে যেতে হবে।’
তাহলে তামিমের সেরা কারা। নিজে যেহেতু বাঁহাতি ওপেনার। তাই পছন্দের বাঁহাতি ওপেনারদের নামই নিয়েছেন তামিম। শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়সুরিয়া ও পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার নাম নিতেই রমিজ তামিমকে থামিয়ে দেন। বলেন, ‘তোমার মধ্যে কিছুটা সাঈদ আনোয়ারের ভাব আছে।’ তামিম হেসে উড়িয়ে দিলেও রমিজ বিশ্লেষণ করে বলেন, ‘তুমি যেভাবে খেল, আমার তোমাকে দেখলেই সাঈদের কথা মনে পড়ে। আমি অনেক ক্রিকেট খেলেছি ওর সঙ্গে। সে তোমার মতোই সহজাত ব্যাটিং প্রতিভার অধিকারী ছিল।’
তামিমকে তার পছন্দের প্রতিপক্ষের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়। তামিম দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানকেই বেছে নেন। এছাড়া নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন বোলারের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে শোয়েব আখতার, সেরা সময়ের সাঈদ আজমল ও মরনে মরকেলের নাম নেন তামিম।