১৪ জুলাই ২০২০, তালহা জামানঃ
ঠিক এক বছর আগের এই দিনে প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। ১৪ জুলাইয়ের সেই মহানাটকীয় ফাইনাল একশ ওভার শেষে ম্যাচ টাই হয়। সুপার ওভার শেষেও তা টাই ছিল। শেষে বেশি বাউন্ডারি মারার মতো বিতর্কিত নিয়মে ইংল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।
ফাইনালে নিউজিল্যান্ড আগে ব্যাট করে ২৪১ রান তুলেছিল। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৫ রান। ট্রেন্ট বোল্টের করা শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে বেন স্টোকস কোনো রান করতে পারেননি। তৃতীয় বলে ছক্কা মারেন। চতুর্থ বলটি মিড উইকেটে পাঠিয়ে দ্বিতীয় রানের জন্য দৌড় দেন স্টোকস। মার্টিন গাপটিলের থ্রো স্টোকসের ব্যাটে লেগে চার হয়। ফলে ওভার থ্রোর ৪ আর দৌড়ে নেওয়া ২সহ ৬ রান পায় ইংল্যান্ড। পঞ্চম বলে রান আউট হন রশিদ। শেষ বলে স্টোকস দুই রান নিতে গিয়ে মার্ক উডকে রান আউট করেন। ফলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। আগে ব্যাট করে সুপার ওভারে ১৫ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। সেই রান তাড়া করতে নেমে শেষ বলে নিউজিল্যান্ডের দরকার ছিল ২ রানের। কিন্তু দ্বিতীয় রানের জন্য ছুটতে গিয়ে রান আউট গাপটিল। তাই সুপার ওভারও হয় টাই। কিন্তু টুর্নামেন্টে একটা অদ্ভুত নিয়ম করা হয়েছিল, যে নিয়মে বেশি বাউন্ডারি মারায় ইংল্যান্ড হয় চ্যাম্পিয়ন। চার বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার ফাইনালে হারা কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেছিলেনÑ ‘এত সুন্দর, এত নাটকীয় একটা ম্যাচের পরে যেভাবে চ্যাম্পিয়নকে বেছে নিতে হলো, সেটা খুব লজ্জাজনক।’
বিতর্ক হয়েছিল শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ওভার থ্রো থেকে ইংল্যান্ডের ৬ রান প্রাপ্তি নিয়েও। আম্পায়ার সাইমন টফেল বলেছিলেন, ‘সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। ওটা ৬ রান নয়, ৫ রান হবে।’ চতুর্থ বলে ৫ রান হলে ইংল্যান্ডের ১ রান কমার সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রাইকও হারাতেন বেন স্টোকস। এটা ভেবে অনেকেই বলেছিলেন আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনার ভুলেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি নিউজিল্যান্ড।
তবে বিতর্ক পাশে সরিয়ে যদি শুধু লর্ডসের ফাইনালকে ক্রিকেটীয় দৃষ্টি থেকে দেখা হয় তাহলে ওয়াসিম আকরামের কথাই সত্যি মনে হবে, ‘কী অসাধারণ একটা ম্যাচ দিয়ে শেষ হলো ২০১৯ বিশ্বকাপ। আমার দেখা সর্বকালের সেরা ফাইনাল। প্রথমে ম্যাচ টাই, তার পরে সুপার ওভারও টাই! কে ভাবতে পেরেছিল এমন একটা রুদ্ধশ্বাস স্ক্রিপ্ট! শেষ দেড় ঘণ্টা যা খেলা হয়েছে, মনে হচ্ছিল যেন গল্পে পড়া কোনো থ্রিলার। বাস্তবে এমন হতে পারে, ভাবাই যায় না।’ লর্ডসের ফাইনাল দেখার পর শচিন টেন্ডুলকার টুইটারে লিখেছিলেন, ‘প্রথম বল থেকে ৬১২ বল পর্যন্ত টানটান উত্তেজনার খেলা। খারাপ লাগছে নিউজিল্যান্ডের জন্য। ইংল্যান্ড যা করেছে ওরাও তাই করেছে, কিন্তু বিশ্বকাপ জেতার জন্য সেটাও যথেষ্ট হলো না।’